পর্তুগালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে যখন অভিবাসন ইস্যু রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হেনরিক গুভেইয়া ই মেলো এক মানবিক ও সাহসী অবস্থান নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দশ বছর পর একজন অভিবাসী কি আমাদের মতোই পর্তুগিজ হতে পারে না? নাকি আমরা এমন কোনো বিশেষ জিন নিয়ে জন্মেছি যা কেবল আমাদেরকেই পর্তুগিজ করে তোলে?
তার এই বক্তব্যে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। যেখানে অধিকাংশ প্রার্থী অভিবাসনকে ভোটের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছেন, সেখানে গুভেইয়া ই মেলো স্পষ্ট জানিয়েছেন— ভোট হারানোর আশঙ্কা থাকলেও তিনি মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অবস্থান থেকে সরবেন না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের উন্নয়নে অভিবাসীদের অবদান অস্বীকার করা যায় না। তারা শুধু শ্রমশক্তি নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও মানবিকতার অংশ। অভিবাসীরা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ—তাদের বাদ নয়, বরং গ্রহণ করতে হবে।
গুভেইয়া ই মেলো জোর দিয়ে বলেন, যদি এই বক্তব্যের কারণে আমি কিছু ভোট হারাই, তবুও পিছিয়ে যাব না। সমাজকে গড়তে হবে ভয়ের ওপর নয় বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার এই অবস্থান পর্তুগালের মূলধারার রাজনীতিতে এক নতুন নৈতিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যখন ইউরোপজুড়ে অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য বেড়ে চলেছে, তখন এক সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান হিসেবে গুভেইয়া ই মেলোর এই অবস্থান মানবিক রাজনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
জনমত জরিপে দেখা গেছে, বিশেষ করে তরুণ ভোটার ও প্রবাসী পর্তুগিজদের মধ্যে গুভেইয়া ই মেলোর বক্তব্য ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে লিখেছেন— অবশেষে এমন এক নেতা কথা বলছেন, যিনি বিভাজন নয়, ঐক্যের বার্তা দিচ্ছেন।
পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী জানুয়ারিতে। তবে নির্বাচনের আগেই গুভেইয়া ই মেলোর এই মানবিক অবস্থান দেশটির রাজনীতিতে নতুন আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

