শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিরোনাম

আমেরিকায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা অ্যাপলের, স্বাগত জানালেন ট্রাম্প

শনিবার, আগস্ট ৯, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়াতে এবং সম্ভাব্য শুল্ক চাপ এড়াতে আরও ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল ইনকরপোরেটেড। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানের আগে দেওয়া এই প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে অ্যাপলের মোট অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের অঙ্ক দাঁড়ালো ৬০০ বিলিয়ন ডলারে।

অ্যাপলের নতুন পরিকল্পনা আমেরিকান ম্যানুফ্যাকচারিং প্রোগ্রামের অংশ। যার লক্ষ্য উন্নত প্রযুক্তি ও সরবরাহ চেইনের বড় একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা। এই উদ্যোগে অংশ নিচ্ছে কর্নিং ইনকরপোরেটেড, অ্যাপ্লায়েড ম্যাটেরিয়ালস, টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টসসহ একাধিক বড় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। কর্নিং কেন্টাকিতে সম্পূর্ণ নতুন একটি কারখানা অ্যাপল গ্লাস উৎপাদনের জন্য উৎসর্গ করবে। যা স্থানীয় কর্মসংস্থান ৫০% বাড়াবে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো দেশে উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হবে। যা অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা, উভয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, আমার আমেরিকা ফার্স্ট নীতি যুক্তরাষ্ট্রে ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এনেছে। অ্যাপলের এই ঘোষণা আমাদের উৎপাদন শিল্পের জন্য আরেকটি বড় জয়।

এর আগে অ্যাপল চার বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা জানিয়েছিল। যার মধ্যে হিউস্টনে সার্ভার উৎপাদন কারখানা, মিশিগানে সাপ্লায়ার একাডেমি এবং দেশীয় সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাড়তি কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। নতুন ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি মূলত দেশীয় উৎপাদন, এআই ল্যাব, সেমিকন্ডাক্টর ইঞ্জিনিয়ারিং এবং উচ্চমানের পণ্যের গবেষণায় ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অ্যাপলের এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে যখন প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন উৎপাদন না করলে ২৫% পর্যন্ত ট্যারিফ আরোপ করা হবে। গত ত্রৈমাসিকে অ্যাপল ট্যারিফজনিত কারণে ৮০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং চলতি ত্রৈমাসিকে এ ক্ষতির পরিমাণ ১.১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর আশঙ্কা করছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও জোরদার করবে এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে ট্যারিফের প্রভাব অনেকাংশে প্রশমিত করতে সক্ষম হবে। তবে পূর্ণাঙ্গভাবে আইফোন উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ চীন ও ভারতে অ্যাপলের কারখানাগুলোতে কয়েক লাখ শ্রমিক কাজ করে এবং জটিল উৎপাদন প্রক্রিয়া চালু আছে।’’

অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তি ও উৎপাদনের ক্ষেত্রকে আরও এগিয়ে নিতে আমাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিনিয়োগ কেবল প্রযুক্তি শিল্প নয়, বরং পুরো অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অ্যাপলের এই বিনিয়োগ প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বের সেরা বিনিয়োগ গন্তব্য। এটি আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আমেরিকানদের জন্য অসংখ্য উচ্চমানের চাকরি সৃষ্টি করবে।