ভয়াবহ মার্কিন বিমান হামলায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকলেও সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থেকে ইরান সরে আসবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
স্থানীয় সময় সোমবার (২১ জুলাই) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন তিনি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ধারাবাহিক বিমান হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমরা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থেকে সরে আসব না, আপাতত সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে একেবারে বন্ধ হবে না। এটি আমাদের বিজ্ঞানীদের অর্জন, জাতীয় গর্বের প্রতীক। কাজেই আমরা এটি ছেড়ে দিতে পারি না।’
ওই সাক্ষাৎকারে আরাকচি জানান, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ‘উন্মুক্ত’ থাকলেও সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা আপাতত নেই। তিনি বলেন, ‘তারা যদি পারস্পরিক সুবিধার ভিত্তিতে এগিয়ে আসে, আমরা আলোচনায় প্রস্তুত। আন্তর্জাতিক আস্থা অর্জনে এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি যে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ তা প্রমাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমরা প্রস্তুত। বিনিময়ে আমরা তাদের কাছ থেকে অবরোধ প্রত্যাহার আশা করি।’
আরাকচি বলেন, ‘আমার বার্তা পরিষ্কার—আসুন আলোচনার মাধ্যমে পরমাণু সংকটের সমাধান খুঁজি। এর আগে একবার তা সম্ভব হয়েছিল, আবারও সম্ভব।’
এদিকে, ট্রাম্প আবারও ইরানে হামলার হুমকি দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্র আরও একবার একই ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। ট্রাম্প বলেন, ‘যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আবারও হামলা করব। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি আগেই বলেছিলাম এমনটা হবে।’
এর আগে, ইরান-ইসরায়েলের এই ১২ দিনের যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রও। পরে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বেশ কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান হামলা চালালে ট্রাম্পের উদ্যোগে কাতারের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি।
যুক্তরাষ্ট্র পরে জানায়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে অন্তত এক থেকে দুই বছর পেছনে ঠেলে দিতে সক্ষম হয়েছে তারা। এ বিষয়ে আরাকচি জানান, ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা এখনো হামলার ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করছে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-কে এ বিষয়ে শিগগিরই অবহিত করা হবে।