ইসরাইলি অবরোধ ভাঙতে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলা। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তিউনিশিয়ার বিজের্ত বন্দর এবং ইতালির সিসিলি দ্বীপের অগাস্টা বন্দর থেকে এ বহরের জাহাজগুলো যাত্রা করে।
আয়োজকদের শেয়ার করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথম সহায়তা জাহাজটি টিউনিসিয়া থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করে। এ সময় কর্মী ও সাংবাদিকরা, যার মধ্যে আনাদোলুর একজন সংবাদদাতাও ছিলেন, যাত্রার মুহূর্তটি ধারণ করেন।
ইতালির বহরের ১৮টি নৌযান সপ্তাহব্যাপী প্রস্তুতি শেষে শনিবার অগাস্টা বন্দর থেকে রওনা হয়। আয়োজকদের বরাতে বলা হয়, এগুলো তিউনিসশিয়া থেকে ছাড়তে যাওয়া অন্য জাহাজগুলোর সঙ্গে আগামী সপ্তাহে সমুদ্রে মিলিত হবে। এর মধ্যে বার্সেলোনা থেকে ছাড়ার পরবর্তী বহরও থাকবে।
আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতালির প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডি) এমপি আরতুরো স্কোত্তো ও ইউরোপীয় সংসদ সদস্য আনালিসা কোরাডোসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই যাত্রায় অংশ নিয়েছেন।
আয়োজকদের তথ্য অনুযায়ী, রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) তিউনিশিয়া ও গ্রিস থেকেও আরও কিছু নৌযান গাজার উদ্দেশে রওনা হবে। সেগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমায় মিলিত হয়ে ‘গাজার পথে সবচেয়ে বড় নৌ-মিশন’-এ পরিণত হবে।
প্রায় ৫০টি জাহাজ নিয়ে গঠিত এই ফ্লোটিলায় ৪৫টিরও বেশি দেশের ৫০০ থেকে ৭০০ কর্মী অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন শিল্পী, এমপি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।
আয়োজকরা জানান, ফ্লোটিলার মূল উদ্দেশ্য হলো ইসরাইলের অবৈধ অবরোধকে চ্যালেঞ্জ করা এবং গাজায় মানবিক করিডর খুলে দেওয়া, যেখানে চলমান অবরোধ ও ত্রাণ বন্ধ থাকায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৮০০’রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই সামরিক অভিযান গাজার অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে এবং অঞ্চলটিকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
গত নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া গাজায় চালানো ইসরাইলের যুদ্ধকে গণহত্যা হিসেবে অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে।