শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

শিরোনাম

‘একদিনেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে চীন’

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দুই দেশই ব্যাপকভাবে ড্রোন ব্যবহার করছে। একে অপরের জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। শত শত ড্রোন দিয়ে প্রতিপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধোঁকা দিচ্ছে। আবার কখনও হামলার উদ্দেশ্যে নয়, প্রতিপক্ষের স্পর্শকাতর স্থাপনার ওপর ড্রোন উড়িয়ে শুধুই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তবে ইউরোপের দুই দেশের এই ড্রোনযুদ্ধের নাটাই এশিয়ান জায়ান্ট চীনের হাতে রয়েছে। তারা চাইলে একদিনেই এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে বলে মনে করছেন ইউক্রেনের এক বিশ্লেষক।

ইউক্রেনের ড্রোন যুদ্ধের অন্যতম পথিকৃৎ আন্দ্রে প্রোনিন কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘চীনা ড্রোন নির্মাতারাই যুদ্ধ থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করছে। চীন চাইলে একদিনেই যুদ্ধ শেষ করতে পারে। আমাদের বা রাশিয়ানদের কাছে ড্রোনের যন্ত্রাংশ রপ্তানি বন্ধ করে দিলেই সেটা সম্ভব।’

কিয়েভের উপকণ্ঠে অবস্থিত নিজের ড্রোন পাইলট প্রশিক্ষণ স্কুলের গুদামঘরে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন প্রোনিন। সেখানে এক ডজনের মতো ড্রোন রাখা ছিল। সেগুলোর মধ্যে ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বাইপ্লেনের ক্ষুদ্র অনুকৃতি থেকে শুরু করে জেটচালিত মিনি-মিসাইল এবং ক্ষুদ্র ফার্স্ট-পারসন-ভিউ ড্রোন।

এসব ড্রোনের প্রতিটিতেই ছিল চীনে তৈরি উপাদান–ইঞ্জিন, ফ্লাইট কন্ট্রোলার, ব্যাটারি, থার্মাল ক্যামেরা ও নেভিগেশন মডিউল। এই উপাদানগুলোই ইউক্রেনের ড্রোন শিল্পের মেরুদণ্ড। চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করেই প্রতিবছর লাখ লাখ লয়টারিং মিউনিশন উৎপাদন করছে দেশটি।

কিয়েভভিত্তিক সামরিক গবেষণা সংস্থা ‘স্নেক আইল্যান্ড’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় ড্রোন নির্মাতারা ফ্রেম, অ্যাভিওনিক্স, ইঞ্জিন ও রেডিওর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের স্থানীয় উৎপাদন গড়ে তুলতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। শিল্পটি এখনও গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। যেমন লিথিয়াম লবণ, নিওডিমিয়াম চুম্বক, নেভিগেশন চিপ ও থার্মাল সেন্সরের মতো উপাদানগুলো চীন থেকে আমদানি করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ালে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে দেশটি। এতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পুরোদমে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সাড়ে তিন বছর পরও সে যুদ্ধ থামেনি। লাখো মানুষের প্রাণহানি ও বাস্তুচ্যুতির পরও যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ।