নিয়মিত দুপুরের খাবার বাদ দিলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই দুপুরের খাবার সময়মত খেতে পারেন না বা ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিয়ে থাকেন। অনেকেই আবার ডায়েটের জন্য দুপুরে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
মাঝে মধ্যে না খেয়ে থাকার কারণে কিছুটা উপকার মিললেও নিয়মিত দুপুরের খাবার বাদ দিলে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
দুপুরে খাবার না খেলে কী ঘটে শরীরে

নিজেকে ফিট রাখার জন্যও কেউ কেউ নিয়ম করে প্রতিদিনই দুপুরের খাবার বাদ দেন। কিন্তু এভাবে খাবার বাদ দেয়ার কারণে শরীরের যে ক্ষতি হয়, তা অনেকেই জানেন না। দুপুরে খাবার খাওয়া বাদ দিলে শরীরে কী ঘটে, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম। তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
রক্তে শর্করার মাত্রা উঠানামা করা:-

দুপুরে খাবার খাওয়া বাদ দিলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, ঘাম, কাঁপুনি, এমনকি জ্ঞান হারানোর আশঙ্কাও দেখা দেয়। আবার এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে এর প্রভাবে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি কমে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিপাক ধীর হওয়া:- দুপুরে না খেলে শরীর শক্তি হারাতে থাকে এবং বিপাক ধীর হয়। এ কারণে শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর ক্ষমতা কমে। ওজন বাড়তে থাকে। শরীর তখন সারভাইভাল মোডে চলে যায়।
বেশি খাওয়ার প্রবণতা:-

দুপুরে না খাওয়ার কারণে সন্ধ্যা বা রাতে অনেক বেশি ক্ষুধা পায় এবং তখন অল্প সময়ে অনেক বেশি খাবার খাওয়া হয়। এ কারণে ওজন বৃদ্ধিসহ গ্যাস-অ্যাসিডিটি ও বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
পুষ্টির ঘাটতি:- দুপুরে খাবার বন্ধ করার কারণে ফাইবার, আয়রন, প্রোটিন, ভিটামিন বি১২ ও ক্যালসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয় শরীর। ফলে চুল পড়া, ত্বক রুক্ষ হওয়া, ক্লান্তি বোধ হওয়া এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসের মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া:- জিঙ্ক, ভিটামিন সি ও প্রোটিনের ঘাটতি থেকে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এ কারণে ভাইরাল সংক্রমণ, ঠান্ডা-কাশি, এমনকি গ্যাসট্রো-ইনফেকশন পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
হজমের সমস্যা:- দীর্ঘ সময় পেট খালি থাকলে পাকস্থলীতে অ্যাসিড জমা হয়। যা অ্যাসিড রিফ্লাক্স, বুক জ্বালা, গ্যাসট্রিক, গ্যাস্ট্রাইটিস এবং অনেক সময় আলসারের মতো জটিল সমস্যার জন্ম দিয়ে থাকে।
হৃদরোগের ঝুঁকি:-
দুপুরে খাবার না খাওয়ার কারণে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ কম-বেশি হতে পারে। আর এমনটা চলতে থাকলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকে অনেকাংশে বেড়ে যায়।