ব্যস্ত জীবনযাপন, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপের কারণে অনেকেই ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলেন। এর সঙ্গে যোগ হয় অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস—যেমন কেক, কোল্ড ড্রিংকস, চকোলেট ও মিষ্টিজাত খাবার। এসব খাবারের অতিরিক্ত চিনি শরীরে নানা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে—ওজন বাড়ায়, হজমশক্তি নষ্ট করে, মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক জেল্লা কেড়ে নেয়।
অন্যদিকে, রান্নাঘরের সাধারণ মসলা দারচিনি হতে পারে আশীর্বাদস্বরূপ। দারচিনিতে রয়েছে সিনামালডিহাইড ও পলিফেনল-এর মতো উপকারী যৌগ, যা প্রদাহ কমায়, বিপাকক্রিয়া উন্নত করে, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং শরীরের রক্ত পরিষ্কার রাখে। ফলে শরীর সতেজ হয়, লিভার ভালো থাকে, অলসতা ও স্থূলতা কমে, আর ত্বক পায় প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা।
দারচিনি ভেজানো পানি খেলে তা শরীর ও ত্বকের উপকারে আসে

দারচিনির পানি ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে, চর্বি কমায় এবং পাচনতন্ত্রকেও উন্নত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, দারচিনি রক্তের গ্লুকোজ, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ কমাতে কার্যকর।
দারচিনিতে সিনামালডিহাইড ও পলিফেনলের মতো বেশ কয়েকটি বিশেষ যৌগ রয়েছে, যা প্রদাহ কমায়, বিপাক উন্নত করে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, শরীরের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। এর অর্থ হলো শরীর চিনিকে আরো ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারে।
এটি রক্ত পরিষ্কার করে, লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে, অলসতা, স্থূলতা বা ত্বকের সমস্যা দূর করে। কিন্তু যখন এগুলো ভারসাম্যপূর্ণ থাকে, তখন শরীর হালকা, পরিষ্কার ও সতেজ লাগে। জেনে নিন কিভাবে দারুচিনি খেতে পারেন।
উজ্জ্বল ত্বকের জন্য

আপনার ত্বক যদি শুষ্ক, প্রদাহিত ও ব্রণ-প্রবণ হয়, তাহলে এটি আপনার জন্য। ত্বককে পুষ্ট করার জন্য একটি ছোট দারচিনি, কয়েকটি জাফরান এবং পিত্ত ঠাণ্ডা করার জন্য ১-২টি শুকনা গোলাপের পাপড়ি প্রয়োজন।
১.৫ কাপ পানি নিন এবং ১০ মিনিটের জন্য কম আঁচে সব কিছু ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা করে ছেঁকে নিন এবং সকালে খালি পেটে এক কাপ গরম পানির সঙ্গে পান করুন। এটি আপনার রক্ত পরিষ্কার করবে এবং আপনার ত্বককে একটি প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা দেবে।
রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য

আপনার যদি চিনির প্রতি আকাঙ্ক্ষা থাকে, দ্রুত শক্তি হ্রাস পায় বা আগে থেকে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকেন, তাহলে এই পানীয়টি তৈরি করুন। এর জন্য একটি দারচিনি, ১/৪ চা চামচ মেথি বীজ, ৩-৪টি তুলসী পাতা ও ১.৫ কাপ পানি প্রয়োজন। ১০-১২ মিনিট ধরে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে সকালে খালি পেটে পান করুন। এটি আপনার অগ্ন্যাশয়কে শক্তিশালী করবে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখবে এবং সারা দিন খিদে পাবে না।
ওজন কমানোর জন্য
আপনি যদি পেট ভারী বোধ করেন বা পেট ফুলে যায়, অথবা আপনার ওজন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, তাহলে এই পানীয়টি সাহায্য করবে। একটি দারচিনি, ১/২ চা চামচ শুকনা আদা গুঁড়া, হজমশক্তি উন্নত করার জন্য সামান্য লবণ, এক চিমটি গোলমরিচ এবং কয়েক ফোঁটা লেবু যোগ করুন। মসলাগুলো ২ কাপ পানিতে ফুটিয়ে অর্ধেক পানি রেখে দিন। ঠাণ্ডা করে লেবু যোগ করুন। বিকেল বা সন্ধ্যায় ধীরে ধীরে পান করুন।