নিউইয়র্ক শহরের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন জোহরান কোয়ামে মামদানি। তিনি শহরের প্রথম মুসলিম, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং প্রথম আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া ব্যক্তি হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
৩৪ বছর বয়সি মামদানি একজন ডেমোক্র্যাটিক সোশালিস্ট। তিনি উগান্ডার বিখ্যাত একাডেমিক মাহমুদ মামদানি ও ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ারের ছেলে। মামদানির জন্ম উগান্ডার কাম্পালায় হলেও সাত বছর বয়সে নিউইয়র্কে চলে আসেন। পরে তিনি আফ্রিকান স্টাডিজে পড়াশোনা করেন।
রাজনীতিতে আসার আগে তিনি একটি হাউজিং সংগঠনে পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে তিনি গরিব পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করতেন। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৩৬-এর প্রতিনিধি হিসেবে তিন মেয়াদ ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।
চলতি বছর মামদানি বিয়ে করেছেন সিরীয় শিল্পী রামা দুওয়াজিকে। তার কাজ দ্য নিউইয়র্কার, ওয়াশিংটন পোস্ট ও ভাইসের মতো বড় বড় মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
গাজা যুদ্ধ ইস্যু মামদানির নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম কেন্দ্রে ছিল। তিনি গত অক্টোবরে বলেন, ‘ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে।’ মামদানি বিডিএস আন্দোলনেরও একজন দৃঢ় সমর্থক। ডিসেম্বরের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে আসলে আমি তাকে গ্রেফতার করব।’
‘গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা’ স্লোগান নিয়েও তিনি আলোচনায় ছিলেন। এ নিয়ে সমালোচনা উঠলেও মামদানি বলেন, ‘একজন মুসলিম হিসেবে আমি জানি কীভাবে আরবি শব্দ বিকৃত করা হয়। অথচ এটি নিপীড়িতদের প্রতি সংহতির প্রতীক।’
অনেকে তাকে ইহুদিবিদ্বেষী বললেও তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তার সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি সরকারের বিরুদ্ধে, ইহুদিদের বিরুদ্ধে নয়।
মামদানি তার নির্বাচনী প্রচারণায় বুদ্ধিদীপ্ত ডিজিটাল কৌশল ব্যবহার করেছেন। এতে শুধু তার জনপ্রিয়তাই নয়, তহবিল সংগ্রহও বেড়েছে। নির্বাচনের কয়েকদিন আগে তিনি ম্যানহাটন জুড়ে বিশাল পদযাত্রা করেন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেলফি তোলেন।
তার এই প্রাণবন্ত প্রচারণা নিউইয়র্কবাসীর পাশাপাশি প্রবাসী সমাজেও আলোড়ন তুলেছে। তারা গর্বের সঙ্গে মামদানির বিজয় উদযাপন করছেন।
মামদানির এক সমর্থক লোকমণি রাই বলেন, ‘জোহরান হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক এবং লক্ষ লক্ষ দাতাদের মাধ্যমে পরিচালিত। স্থানীয় ডেমোক্র্যাটিক প্রাথমিক নিউইয়র্ক প্রচারণায় এত স্বেচ্ছাসেবক এবং তৃণমূল স্তরের উত্তেজনা দেখা খুবই বিরল।’


