প্রিয় ফল নিয়মিত ও বেশি পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে না তো? অতিরিক্ত ফল খাওয়া নিয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা রয়েছে। ফ্লোরিডার ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. প্রদীপ জামনাদাস ব্যাখ্যা করেছেন, ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও এর প্রাকৃতিক চিনি অতিরিক্ত খেলে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
ভিটামিন, ফাইবার ও খনিজের একটি চমৎকার উৎস হচ্ছে ফল। এ ছাড়া এতে রয়েছে নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই অনেকের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার অপরিহার্য অংশ এই ফল।

অতিরিক্ত ফল খাওয়া নিয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তায় যা বলেন
ফল সম্পর্কে ভুল ধারণা
‘দ্য ডাইরি অব এ সিইও পডকাস্ট’ ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করে। সেখানে ডা. প্রদীপ জানান, ফলের প্রাকৃতিক চিনি হলেও তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে ইনসুলিন ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। পডকাস্টে যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এমন কোনো খাবার আছে কি না, যেগুলো মানুষ স্বাস্থ্যকর মনে করে, কিন্তু এগুলো মূলত হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর? তখন তিনি বলেন—অতিরিক্ত ফল খাওয়া তার মধ্যে অন্যতম। তিনি সতর্ক করে বলেন, ফল কেবল মৌসুমে খাওয়া উচিত। কারণ ওই সময়ে এতে প্রচুর ফ্রুকটোজ থাকে।

ফ্রুকটোজ কেন ক্ষতিকর
কার্ডিওলজিস্টের মতে, ফ্রুকটোজ এক ধরনের চিনি, আর অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলেই হয় ফ্যাটি লিভার। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ফলের অতিরিক্ত গ্রহণ করোনারি ধমনি রোগ, ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ফলকে সাধারণত স্বাস্থ্যকর হিসেবে দেখি। কিন্তু বাস্তবে, ফল কেবল শরৎকালে, মৌসুমে খাওয়া উচিত এবং সেটি সামান্য পরিমাণে। কারণ এর অতিরিক্ত ফ্রুকটোজ বিপাকক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনে।’
ফল খাওয়ার সঠিক সময়

ডা. প্রদীপের পরামর্শ অনুযায়ী, মৌসুমি ফল অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘মানুষ ফল নিয়ে পাগল হয়ে যায়।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি একটি রোগীর কথা শেয়ার করেন—‘আমার এক রোগী মানসিক সমস্যা ও হৃদরোগে ভুগছিল।
তার প্রতিদিনের খাবার ছিল কেবল ফল এবং সেটি সকাল, দুপুর, রাত—তিন বেলাতেই। কিন্তু যখন আমরা তাকে ফল খাওয়া বন্ধ করতে বললাম, তখন তার স্বাস্থ্য উন্নতি হতে শুরু করল।