ভিটামিন সি সমৃদ্ধ দেশি ফল আমড়া এখন বাজারে। আষাঢ়ের শেষ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত আমড়ার ভরা মৌসুম থাকে। টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফল শুধু মুখরোচকই নয়, বরং পুষ্টিগুণেও ভরপুর।
আমড়ায় আছে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, আঁশ, থায়ামিন, রিবোফ্লাবিনসহ নানা উপকারী উপাদান। নিয়মিত এই মৌসুমি ফল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, দাঁত ও হাড় মজবুত হয়, এমনকি হজমশক্তিও উন্নত হয়।
মৌসুমি ফল আমড়া খাওয়ার ৮টি বিশেষ উপকারিতা

১. দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক
দাঁতের মাড়ি ফোলা বা গোড়া থেকে রক্ত পড়ার মতো সমস্যায় আমড়া কার্যকর। এতে থাকা ভিটামিন সি দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, যা শরীরকে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। সর্দি, কাশি ও মৌসুমি ফ্লু প্রতিরোধে এটি দারুণ কাজ করে।
৩. হাড় ও দাঁতের গঠনে উপকারী

আমড়ার ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি একসঙ্গে হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে। একইসঙ্গে ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন বাড়িয়ে বয়সের ছাপ কমায়।
৪. ক্ষুধা বাড়ায় ও বমিভাব দূর করে
আমড়া মুখে রুচি বাড়ায় এবং বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে। গর্ভবতী নারীদের জন্যও এটি উপকারী হতে পারে।
৫. রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে
আমড়ায় থাকা আয়রন শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। এটি রক্তাল্পতা দূর করে এবং শরীরে অক্সিজেন পরিবহনকে স্বাভাবিক রাখে।
৬. হৃদযন্ত্র ও হাড়ের জন্য উপকারী
আমড়ায় ফ্যাট ও সোডিয়াম নেই, বরং ভিটামিন ‘কে’ ও কপার আছে। এই উপাদানগুলো রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং হাড়কে মজবুত রাখে।
৭. পিত্ত ও কফনাশক
প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে আমড়াকে পিত্তনাশক ও কফনাশক হিসেবে ধরা হয়। এটি হজমশক্তি উন্নত করে এবং শরীরকে হালকা রাখে।
৮. মাংসপেশী শক্তিশালী করে

আমড়ায় থাকা থিয়ামিন মাংসপেশীর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে পেশী দুর্বল হয়ে যায়, তাই নিয়মিত আমড়া খেলে পেশী শক্তিশালী থাকে।
শেষ কথা
টক-মিষ্টি স্বাদের আমড়া শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, বরং শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। দাঁত ও হাড় মজবুত করা থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, এমনকি পেটের সমস্যাও দূর করে এই দেশি ফল। তাই মৌসুমে অবশ্যই খাদ্যতালিকায় আমড়া রাখুন।