ব্রিটেন নির্মিত স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক কারখানায় হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী একে ‘সফল হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে। রাশিয়া এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। খবর বিবিসির।
ইউক্রেনের সেনা সদর দপ্তর জানায়, এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রুশ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে গেছে এবং এটি ছিল ‘বৃহৎ পরিসরের যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার’ অংশ। লক্ষ্যস্থল ছিল রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক কেমিক্যাল প্লান্ট—যা ইউক্রেনের ভাষায় আগ্রাসী রাষ্ট্রের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের একটি মূল স্থাপনা।
সেনাবাহিনীর এক্স পোস্টে বলা হয়, ওই কারখানায় গানপাউডার, বিস্ফোরক এবং রকেট জ্বালানির উপাদান তৈরি হয়, যা রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ভূখণ্ডে হামলার জন্য ব্যবহার করছে।
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে আসছে— ইউক্রেনকে যেন এমন অস্ত্র না দেওয়া হয় যা দিয়ে দূরপাল্লার আক্রমণ চালানো সম্ভব।
তবে কিয়েভের দাবি, মস্কোর যুদ্ধযন্ত্র চালাতে যেসব স্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, সেগুলোতে হামলা চালানো অত্যাবশ্যক।
একই দিনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ ইউরোপীয় নেতারা ঘোষণা দেন, রাশিয়ার অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষা শিল্পের ওপর চাপ বাড়ানো হবে যতক্ষণ না প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘শান্তি আলোচনায় রাজি হচ্ছেন’।
ইউক্রেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নরওয়ের নেতারা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, যুদ্ধবিরতির আগে, চলাকালীন এবং পরেও ইউক্রেনকে সবচেয়ে শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে।
এই পরিস্থিতি এমন এক সময়ের মধ্যে ঘটছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হলেও ট্রাম্প তাতে অনীহা প্রকাশ করেন। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পরিকল্পনাও আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে রাশিয়া আবারও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিমান হামলা চালায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্রিয় হওয়ার শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া, যা এখনো চলছে। বর্তমানে মস্কো ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা দখলে রেখেছে, যার মধ্যে ২০১৪ সালে সংযুক্ত ক্রিমিয়া উপদ্বীপও রয়েছে। সাম্প্রতিক স্টর্ম শ্যাডো হামলাটি ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধের একটি নতুন ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতায় চাপ তৈরি করতে পারে।