ফ্যাটি লিভার সংক্রান্ত রোগ দুইটি। একটি হলো- অ্যালকোহলের দ্বারা প্ররোচিত এবং আরেকটি নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। আমেরিকায় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তদের বেশিরভাগই স্থূল এবং অত্যন্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে অভ্যস্ত।
নাম থেকে বোঝা যায় ফ্যাটি লিভার রোগ মানে আপনার লিভারে খুব বেশি ফ্যাট রয়েছে। সুস্থ দেহে লিভার বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং পিত্ত থেকে হজম প্রোটিন উৎপন্ন করে। ফ্যাটি লিভার রোগের চিকিৎসার অন্যতম উপায় হলো নির্দিষ্ট ডায়েট মেনে চলা।
সুস্থ থাকতে লিভার ভালো থাকা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার সুস্থ থাকলে শরীর প্রাণবন্ত থাকে। নানা কারণে শরীরে ফ্যাট জমে। এর মধ্যে রয়েছে- অনিয়ন্ত্রিত খাবার, ওজন বৃদ্ধি, কম চলাফেরা, মানসিক চাপ ইত্যাদি।
জীবনধারায় সামান্য পরিবর্তন আনার মাধ্যমে লিভারের ফ্যাট কমানো যায়। এজন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস আর নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি।
খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা:

বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘যে খাবার শরীরের জন্য ভারী, সেটিই লিভারের জন্য বোঝা।’ তাই ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত ও অতিরিক্ত তেল–চর্বি এড়িয়ে চলতে হবে। খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে আঁশযুক্ত শাকসবজি ও ফল।
এছাড়াও দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখুন পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, ডাল ও ডিমের সাদা অংশ। চিনি ও কোমল পানীয় যত কম খাবেন ততই মঙ্গল।
শরীরচর্চার অভ্যাস:

চিকিৎসকদের মতে, সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা দৌড় লিভারের ফ্যাট গলাতে সাহায্য করে। যোগব্যায়াম ও ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজও করতে পারেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি অর্ধেকেরও বেশি কমে যায়।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন:
ফ্যাটি লিভারের ফ্যাট কমাতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন জরুরি। প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম লিভারের জন্য অপরিহার্য। স্ট্রেস কমাতে ভরসা রাখতে পারেন মেডিটেশন, বই পড়া কিংবা প্রিয় কাজের সঙ্গে সময় কাটানোর মতো অভ্যাসে। পাশাপাশি অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা জরুরি।
প্রাকৃতিক সাহায্য:
গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লিভারের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। হলুদ ও রসুন প্রদাহ কমায়। পাশাপাশি বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। লেবু পানি হজম ভালো রাখে ও শরীরকে ডিটক্স করে।
চিকিৎসকের পরামর্শ:

ফ্যাটি লিভারকে হালকা ভেবে অবহেলা করা উচিত নয়। এ বিষয়ে নিয়মিত পরীক্ষা করানো জরুরি। তাই ফ্যাটি লিভারের কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।