মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

শিরোনাম

শরীরে প্রোটিনের অভাব থাকলে হতে পারে যেসব রোগ

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫

প্রিন্ট করুন
প্রোটিন

প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অন্যতম অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। এটি পেশি শক্তিশালী রাখা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হরমোন তৈরি, কোষ গঠন এবং সার্বিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রোটিন খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি থাকে, বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

একজন সুস্থ পুরুষের প্রতিদিন ৫০–৬০ গ্রাম এবং একজন নারীর ৭০–৮০ গ্রাম প্রোটিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সঠিক পরিমাণ নির্ভর করে বয়স, ওজন, উচ্চতা এবং শারীরিক অবস্থার ওপর।

কিন্তু অনেক সময় খাদ্যাভ্যাসের অসতর্কতা, রোগ বা ডায়েট নিয়ন্ত্রণের কারণে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দেয়। আর এ ঘাটতি দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

চলুন জেনে নেই শরীরে প্রোটিনের অভাবে কী কী সমস্যা হতে পারে

১. ফোলাভাব (Edema)

প্রোটিন রক্তে তরল পদার্থের ভারসাম্য বজায় রাখে। প্রোটিনের ঘাটতি হলে টিস্যুতে পানি জমতে শুরু করে, যার ফলে হাত-পা বা পেটে ফোলাভাব দেখা দেয়। এটি প্রোটিনের ঘাটতির অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ।

২. মেজাজ পরিবর্তন ও মানসিক সমস্যা

প্রোটিনে থাকা অ্যামিনো এসিড মস্তিষ্কে সেরোটোনিন ও ডোপামিনের মতো রাসায়নিক তৈরিতে সাহায্য করে। প্রোটিন না পেলে উদ্বেগ, মানসিক চাপ, খিটখিটে মেজাজ ও ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৩. ক্লান্তি ও দুর্বলতা

যথেষ্ট ঘুমের পরও যদি সারাদিন ক্লান্ত লাগে, তবে তার কারণ হতে পারে প্রোটিনের অভাব। প্রোটিন শক্তি সরবরাহকারী এনজাইম ও হরমোন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এর ঘাটতি হলে অলসতা, দুর্বলতা ও মানসিক ক্লান্তি দেখা দেয়।

৪. চুল, নখ ও ত্বকের সমস্যা

চুল, নখ ও ত্বকের জন্য প্রোটিনের কেরাটিন ও কোলাজেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘাটতি হলে চুল পড়তে থাকে, নখ ভেঙে যায় এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে চেহারায় আগেভাগেই বার্ধক্যের ছাপ পড়তে পারে।

৫. অতিরিক্ত খিদে ও খাবারের প্রতি আকর্ষণ

প্রোটিন পেট ভরা রাখে এবং খিদে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ঘাটতি হলে বারবার ক্ষুধা লাগে, মিষ্টি খাবারের ইচ্ছা বেড়ে যায় এবং এনার্জি কমে যায়। এর ফলে ওজনও বেড়ে যেতে পারে।

প্রোটিনের ঘাটতি রোধে কী করবেন?

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখুন।
দুধ, ডাল, ডিম, মাছ, মাংস, সয়াবিন, পনির, মটরশুটি, বাদাম ও শুকনো ফল প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস।
যারা নিরামিষাশী, তারা উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস যেমন ডাল, সয়াবিন, টোফু, বাদাম ও বীজ বেশি করে খেতে পারেন।
পর্যাপ্ত প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরও যদি এ ধরনের উপসর্গ থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রোটিনের ঘাটতি শরীরে ধীরে ধীরে নীরব ঘাতকের মতো প্রভাব ফেলে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিনের খাবারে প্রোটিনকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।