শরীরে কিছু ভিটামিনের অভাবে অল্প বয়সেই চোখের সমস্যা হতে পারে। দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া, আলোতে অস্বস্তি বা চোখে শুষ্কতা অনুভব করা হতে পারে ভিটামিন এ-এর ঘাটতির স্পষ্ট লক্ষণ। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান অঙ্গগুলোর একটি চোখ। আর সেই চোখকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন এ হলো এক অপরিহার্য উপাদান।
সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, শরীরে একটি ভিটামিনের ঘাটতি হলে চোখের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং দীর্ঘ মেয়াদে রাতে দেখার অসুবিধা ও দৃষ্টিহানির ঝুঁকি বাড়ে। আর সেটি হলো ভিটামিন এ।
শরীরে ভিটামিন এ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ

ভিটামিন এ চোখের রেটিনার কোষগুলোকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এটি চোখে আলো গ্রহণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কর্নিয়া ও কনজাংটিভার আর্দ্রতা বজায় রাখে।
এই ভিটামিনের অভাবে চোখ শুকিয়ে যায়, জ্বালা করে এবং ধীরে ধীরে দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন এই ঘাটতি চলতে থাকলে চোখের কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর এর ফলে স্থায়ী অন্ধত্বের বিপদও আসতে পারে যেকোনো সময়।
ভিটামিন এ-এর ঘাটতির সাধারণ লক্ষণ

- রাতে বা অন্ধকারে স্পষ্ট দেখতে অসুবিধা।
- চোখে শুষ্কতা বা চুলকানি।
- দৃষ্টির ঝাপসাভাব বা আলোতে অস্বস্তি।
- চোখের সাদা অংশে ধূসর দাগ।
- ঘন ঘন চোখে সংক্রমণ।
- কিভাবে পূরণ করবেন
প্রতিদিনের কয়েকটি খাবার থেকেই আপনি সহজে শরীরে ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ করতে পারেন।
কী সেসব খাবার, জেনে নিন—

গাজর : গাজরে আছে প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। প্রতিদিন এক বাটি গাজর খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়।
পালং শাক ও সবুজ শাক-সবজি : পালং শাক, মেথি শাক, কলমি শাক-এসব শাকে ভিটামিন এ ছাড়াও থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। আর এটি চোখের স্নায়ু রক্ষা করতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলু ও কুমড়া : এই সবজিগুলো উজ্জ্বল রঙের হওয়ার কারণেই এগুলোতে প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন থাকে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে চোখের আর্দ্রতা বজায় থাকে।
দুধ, ডিম ও মাছ : দুধ, ডিমের কুসুম ও মাছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ পাওয়া যায়। এগুলো চোখ ছাড়াও ত্বকের সমস্যা সমাধান এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এ ছাড়া দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমান, মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন না, চোখ যাতে শুষ্ক না হয়, তার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করুন, সূর্যের ইউভি রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করতে বাইরে বের হলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।