যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রম আংশিকভাবে অচল বা ‘শাটডাউন’-এ পড়েছে। বাজেট বিল নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানদের সমঝোতায় ব্যর্থতার কারণে বুধবার থেকে এ অবস্থা শুরু হয়। ফলে আবশ্যক নয় এমন বহু সরকারি সেবা বন্ধ হয়ে গেছে এবং লাখো সরকারি কর্মীর বেতন আটকে গেছে।
সাধারণত শাটডাউনের সময় কর্মীদের সাময়িক ছুটিতে (ফার্লো) পাঠানো হয় এবং পরে তারা বকেয়া বেতনসহ কাজে ফেরেন। তবে এবারের পরিস্থিতি আরও কঠিন, কারণ ট্রাম্প প্রশাসন স্থায়ীভাবে কর্মী ছাঁটাইয়ের হুমকি দিয়েছে, যা নজিরবিহীন। এতে প্রায় ৯ লাখ ফেডারেল কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়তে পারেন।
এই অচলাবস্থার মূল ইস্যু হলো স্বাস্থ্যসেবা খাত। ডেমোক্র্যাটরা দাবি করছে, মেডিকেড খাতে বরাদ্দ পুনর্বহাল করতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিমা খরচ কমাতে ট্যাক্স ক্রেডিটের মেয়াদ বাড়াতে হবে। রিপাবলিকানরা এ দাবির বিরোধিতা করছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাবকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে আলোচনাও বাতিল করেছেন।
অচলাবস্থার ফলে এফবিআই, সিআইএ, সশস্ত্র বাহিনী এবং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের মতো জরুরি সেবা চালু থাকলেও তারা বেতন পাবেন না যতক্ষণ না সংকট শেষ হয়। তবে সোশ্যাল সিকিউরিটি, মেডিকেয়ার এবং ডাক পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে, কারণ এগুলো বাধ্যতামূলক খরচের খাত বা করের টাকায় পরিচালিত হয় না। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায় ঋণ অনুমোদনের মতো সেবা বন্ধ থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের ঘটনা নতুন নয়। ২০১৮-১৯ সালে সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ নিয়ে ৩৫ দিনের জন্য সরকার আংশিকভাবে বন্ধ হয়েছিল, যা আধুনিক ইতিহাসে দীর্ঘতম। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবার পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে, কারণ হোয়াইট হাউস সরকারি সংস্থাগুলোকে স্থায়ী ছাঁটাইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে।
এ অবস্থায় সমঝোতার সম্ভাবনা খুব কম বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অচলাবস্থা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন অর্থবছর ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়।
এদিকে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের উভয় কক্ষ নিয়ন্ত্রণ করলেও বিল পাসের জন্য প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট সিনেটে জোগাড় করতে পারেনি। সিনেটে রিপাবলিকানদের আসন ৫৩ এবং ডেমোক্র্যাটদের ৪৭। অন্যদিকে, প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের ২২০ আসনের বিপরীতে ডেমোক্র্যাটদের আছে ২১২টি আসন।