শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য বাবা-মায়ের কাছে একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। শিশু হঠাৎ করে মলত্যাগে সমস্যা, পেট ব্যথা, অস্বস্তি ও অরুচি শিশুর স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে। যদিও মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া অস্বাভাবিক নয়, তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন—কিছু খাবার নিয়মিত খেলে শিশুর হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং মল শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়তে পারে। তাই কোন খাবারগুলো এ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে তা জানা জরুরি।
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ দুগ্ধজাত খাবার

দুধ, পনির, মাখন বা অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন প্রচুর থাকলেও অতিরিক্ত খাওয়ালে শিশুর হজমে সমস্যা হয়। বিশেষ করে যেসব শিশু প্রতিদিন অনেক গরুর দুধ পান করে কিন্তু পর্যাপ্ত ফাইবার পায় না, তাদের মল শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। তাই শিশুকে দুধের পাশাপাশি শাকসবজি, ফলমূল এবং ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো জরুরি।
কলা (বিশেষ করে কাঁচা)
কলা সাধারণত শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর ফল হলেও কাঁচা বা আধাপাকা কলায় প্রচুর স্টার্চ থাকে, যা হজমে সময় নেয় এবং মলকে শক্ত করে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য বেড়ে যেতে পারে। বিপরীতে পাকা কলায় বেশি ফাইবার থাকে, যা শিশুর হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে কার্যকর।
ভাত

ভাত আমাদের প্রধান খাবার হলেও এতে ফাইবার কম থাকে। অতিরিক্ত ভাত খেলে শিশুর মল শক্ত হতে পারে। তাই শিশুকে ভাত খাওয়ানোর সময় সঙ্গে ডাল, শাকসবজি বা ওটস, বার্লি জাতীয় দানা দেওয়া উচিত, যাতে পর্যাপ্ত ফাইবার পাওয়া যায় এবং হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকে।
প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেটজাত খাবার
চিপস, ক্র্যাকার, বিস্কুট বা শিশুর জন্য তৈরি প্রক্রিয়াজাত নাস্তা প্রায়শই ফাইবারে কম এবং সংরক্ষণকারী ও কৃত্রিম উপাদানে ভরপুর থাকে। এগুলো শিশুর হজমে বাধা দেয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ায়। তাই শিশুদের যতটা সম্ভব টাটকা, ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ানো উচিত।
গাজর (রান্না করা বা পিউরি করা অবস্থায়)

গাজর খুবই পুষ্টিকর ও উপকারী সবজি। তবে রান্না বা পিউরি করা অবস্থায় এর ফাইবার নষ্ট হয়ে যায়, যা কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করতে পারে। শিশুর বয়স অনুযায়ী কাঁচা বা হালকা সিদ্ধ করে মিহি করে দেওয়া গাজর খাওয়ানো হজমের জন্য ভালো।
সমাধান কী?
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরি হলো সুষম খাদ্যাভ্যাস। প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি, ফলমূল ও প্রচুর পানি রাখতে হবে। পাশাপাশি শিশুকে সক্রিয় রাখতে হবে, কারণ খেলাধুলা হজম প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। যদি তবুও সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

