বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘দুর্গোৎসব শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি এখন দেশের সংস্কৃতিরও অংশ হয়ে গেছে। এ উৎসব যেভাবে বলা হয় সার্বজনীন, আসলে সেটি কেবল সার্বজনীন না। বরং আমাদের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সংবিধান অনুযায়ী দেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই।
গতকাল সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর জেএমসেন হলে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
আরো পড়ুন
ফুলগাজীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি সাইফুল, সম্পাদক শুভ
ফুলগাজীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি সাইফুল, সম্পাদক শুভ
বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সীমানায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতি ও ইতিহাস নির্বিশেষে সবাই সংবিধান অনুযায়ী সমান নাগরিক।
তাই সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। যদি সংবিধান আপনাকে সমান অধিকার দেয়, তাহলে সংখ্যালঘু ধারণা সাংঘর্ষিক। এটা হতে পারে না। আমাদের সবাইকে এটি মাথায় রাখতে হবে।
’
শৈশবের স্মৃতিচারণ করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন এত মণ্ডপ ছিল না। মহানগরে সীমিত কিছু মণ্ডপ ছিল। আমার বাড়ি কাট্টলী, সেখান থেকে কৈবল্যধাম ছিল আমাদের কাছের মণ্ডপ। আমরা সেখানে যেতাম এবং বিভিন্ন উৎসবে যোগ দিতাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশে আমরা সবাই সমানভাবে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করব।
ধর্মীয় অনুষ্ঠান উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে পালন করব, এটাই আমার অঙ্গীকার। বিভিন্ন ধর্মের উৎসবে সবাই যেন অংশ নিতে পারি, সেই চর্চা গড়ে তুলতে হবে। অতীতের ভুলত্রুটি নিয়ে মাথা ঘামানোর চেয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার দিকে মনোযোগী হতে হবে।’
দলের নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন— ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এটি কোনো পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট নয়, বরং দলের নীতি ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বলা হয়েছে। একইভাবে- ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা সবার, এটিও পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট নয়, বরং নীতি নৈতিকতা থেকে বলা।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পাহাড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা আয়োজন নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা যেই অবস্থাতেই থাকি না কেন, কারো নাগরিক অধিকার হরণ করার অধিকার আমাদের নেই। সংবিধান সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে, কারো বেশি বা কম নয়। দেশ পরিচালনায় ও দৈনন্দিন জীবনেও এটি মাথায় রাখতে হবে।’
এর আগে তিনি শুলক বহর ওয়ার্ডের ২ নম্বর গেইট আদর্শ পাড়া মুরাদপুর মন্দির, লালখান বাজার হাইওয়ে মোড় পূজা মণ্ডপ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড হাসপাতালের পাশে লোকসেড গেট পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন।