বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন হার্ট দুর্বল হতে শুরু করে। বিশেষ করে হার্ট তখন সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়ে। ৬০-৭০ বছর বয়সের পর উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বা হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যায় অনেকেই ভোগেন।
তবে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স যতই হোক না কেন কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললে ৭০ বছর বয়সের পরও হার্টকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখা সম্ভব।
হার্টের সুস্থতা মূলত নির্ভর করে জীবনযাত্রার ওপর। বয়স যতই হোক না কেন, সঠিক ডায়েট, নিয়মিত শরীরচর্চা, মানসিক প্রশান্তি, পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা বজায় রাখলে ৭০ বছর বয়সের পরেও হৃদ্যন্ত্র সুস্থ ও সক্রিয় রাখা সম্ভব।
৭০ বছর বয়সেও থাকবে হার্ট ভালো থাকবে

হৃদ্স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো নিয়মিত ব্যায়াম। প্রতিদিন সকালে অন্তত আধঘণ্টা হাঁটা, হালকা দৌড়, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করলে শরীরের রক্তসঞ্চালন ভালো থাকে। এতে বাড়তি চর্বি ঝরে যায় এবং হার্ট শক্তিশালী হয়। বয়স বাড়লেও প্রতিদিন সক্রিয় থাকার অভ্যাস হার্টকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখে।
সঠিক খাবার নির্বাচন
বয়স বাড়লে খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ সতর্কতা জরুরি। তেল-চর্বি, ভাজাপোড়া বা প্রক্রিয়াজাত খাবার হার্টের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর বদলে বেশি করে খেতে হবে শাকসবজি, মৌসুমি ফল, ডাল, ওটস, বাদাম এবং সহজপাচ্য খাবার। লবণ ও চিনি কম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। খাদ্যাভ্যাসে এই পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদে হার্টকে সুরক্ষা দেয়।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ

চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা হৃদ্রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তাই মনের প্রশান্তির জন্য নিয়মিত মেডিটেশন, শান্ত সুরের গান শোনা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো বা নিজের পছন্দের কাজ করা অভ্যাসে আনতে হবে। মানসিক প্রশান্তি হার্টের ওপর চাপ কমায় এবং সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখে।
হার্ট ভালো রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম
বয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টার নিরবচ্ছিন্ন ঘুম অপরিহার্য। ঘুমের ঘাটতি হলে রক্তচাপ বেড়ে যায়, হার্টের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ে। তাই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো এবং ঘুমের মান বজায় রাখা হৃদ্রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
বয়সের সঙ্গে শরীরে নানা পরিবর্তন আসে। তাই সময়মতো ডাক্তার দেখানো এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। রক্তচাপ, সুগার, কোলেস্টেরল বা ইসিজি পরীক্ষা করলে সমস্যা আগেভাগেই ধরা পড়ে এবং চিকিৎসা নেওয়া সহজ হয়। এতে বড় কোনো জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
হার্টের সুস্থতা মূলত নির্ভর করে জীবনযাত্রার ওপর। বয়স যতই হোক না কেন, সঠিক ডায়েট, নিয়মিত শরীরচর্চা, মানসিক প্রশান্তি, পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা বজায় রাখলে ৭০ বছর বয়সের পরেও হৃদ্যন্ত্র সুস্থ ও সক্রিয় রাখা সম্ভব।
ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন

ধূমপান হৃদ্যন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রু। এটি রক্তনালী সংকুচিত করে, রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয় এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। একইভাবে অ্যালকোহলও হার্টের ক্ষতি করে। তাই এগুলো থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
হার্ট সুস্থ রাখতে শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখা জরুরি। পানি রক্তকে পাতলা রাখে এবং রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
দাঁতের যত্ন নিন
আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, দাঁতের ইনফেকশন বা মাড়ির অসুখ হার্টের সমস্যা বাড়াতে পারে। কারণ মুখের ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবেশ করে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন, ডেন্টাল চেকআপ করুন।


