মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

শিরোনাম

প্রতিদিনের ব্যবহৃত ৫ জিনিস, যা হতে পারে শরীরের জন্য ক্ষতিকর

শনিবার, আগস্ট ৩০, ২০২৫

প্রিন্ট করুন
ব্যবহৃত ৫ জিনিস

আমরা প্রতিদিন নানা ধরনের জিনিস ব্যবহার করি। রান্নাঘরের পাত্র থেকে শুরু করে পানির বোতল কিংবা ঘর সতেজ রাখার উপকরণ—সবই আমাদের জীবনের অংশ। কিন্তু জানেন কি, এই সাধারণ জিনিসগুলোর কিছু দীর্ঘমেয়াদে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে? এদের মধ্যে থাকা রাসায়নিক উপাদান শরীরে প্রবেশ করে টক্সিন জমতে সাহায্য করে। এর প্রভাবে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, মস্তিষ্ক ও হজমের ওপর পড়তে পারে বিরূপ প্রভাব। চলুন জেনে নিই এমন ৫টি দৈনন্দিন ব্যবহৃত জিনিস এবং এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে।

প্রতিদিনের ব্যবহৃত ৫ জিনিস

পুরনো নন-স্টিক পাত্র

রান্নার জন্য নন-স্টিক পাত্র অনেক জনপ্রিয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এদের উপরের টেফলনের আস্তরণ উঠে যায়। তখন রান্নার খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে ‘পিএফওএ’ (Perfluorooctanoic acid) নামক এক ধরনের রাসায়নিক। গবেষণা বলছে, এই উপাদান শরীরে গেলে ক্যানসার, লিভারের সমস্যা ও হরমোনজনিত অসুখের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই নন-স্টিক পাত্র ব্যবহার করলে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আস্তরণ যেন নষ্ট না হয়। নিয়মিত ব্যবহারে পাত্র পুরনো হয়ে গেলে পরিবর্তন করাই সবচেয়ে নিরাপদ।

প্লাস্টিকের বোতল

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বোতলে আমরা পানি বা অন্যান্য পানীয় সংরক্ষণ করি। কিন্তু এসব বোতলে থাকে বিসফেনল এ (BPA) নামক রাসায়নিক। এটি শরীরে প্রবেশ করলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘমেয়াদে ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা এমনকি বন্ধ্যাত্বের মতো জটিলতাও দেখা দিতে পারে। তাই পানির জন্য কাঁচ, স্টিল বা BPA-ফ্রি বোতল ব্যবহার করাই শ্রেয়।

সুগন্ধি মোমবাতি ও এয়ার ফ্রেশনার

ঘরকে সুগন্ধি রাখতে অনেকেই এয়ার ফ্রেশনার বা সুগন্ধি মোমবাতি ব্যবহার করেন। কিন্তু এগুলোতে থাকা থ্যালেট এবং বিভিন্ন ক্ষতিকর অর্গানিক কম্পাউন্ড শরীরের ক্ষতি করতে পারে। এসব উপাদান শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ঢুকে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, এমনকি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করার ঝুঁকি তৈরি করে। বিকল্প হিসেবে কর্পূর, এসেনশিয়াল অয়েল বা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি মোমবাতি ব্যবহার করতে পারেন।

সুগন্ধিযুক্ত কাপড় ধোয়ার সাবান

রঙিন ও সুগন্ধিযুক্ত ডিটারজেন্ট বা কাপড় ধোয়ার সাবান অনেকের পছন্দ। কিন্তু এসব সাবানে থাকে থ্যালেট এবং সিনথেটিক রাসায়নিক উপাদান, যা ত্বক ও শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। এতে ত্বকের অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট বা হরমোনজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সম্ভব হলে সুগন্ধিবিহীন বা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি সাবান ব্যবহার করা ভালো।

কৃত্রিম চিনি

চা, কফি বা ডায়েট ফুডে অনেকেই কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করেন। ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার’ যেমন অ্যাসপার্টেম, সুক্রোজ বা সুক্রালোজ নিয়মিত খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। এর অতিরিক্ত ব্যবহার টাইপ-টু ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা ও হজমের গন্ডগোল তৈরি করতে পারে। প্রাকৃতিক বিকল্প হিসেবে গুড়, মধু বা স্টেভিয়ার মতো প্রাকৃতিক মিষ্টি ব্যবহার করা যেতে পারে।

শেষকথা

আমাদের অজান্তেই প্রতিদিনের ব্যবহার করা এই জিনিসগুলো শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সচেতন থাকা জরুরি। রান্নাঘরে, ঘরে বা নিজের শরীরের যত্নে ব্যবহৃত জিনিসের মান ও উৎস সম্পর্কে সতর্ক থাকলে দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।