নিজস্ব প্রতিবেদক: পরনে রঙিন শাড়ি, হাতে চুড়ি, পুরো শরীরে বাঙালি সাজ। গাছ তলে দাড়িয়ে গল্প করছেন। আবার কেউ পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন কপি হাতে। কারও বা ব্যস্ততা জমিয়ে আড্ডাবাজি করতে। কেউবা ব্যস্ত নিজের ব্যবসা সামলাতে। চারপাশে হরেক রকমের দোকান। এসবের নামও লেখা আছে বাংলায়। দেখে মনে হবে বাংলাদেশের কোন উপ-শহরের সড়ক ঘেঁষা মার্কেট এটি। কিন্তু না! এটি সুদূর কানাডায় অবস্থিত বাঙালি অধ্যূষিত ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউয়ের চিত্র।
টরন্টো শহরের ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউ সম্প্রতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। স্থানীয়দের এবং প্রবাসী বাঙালিদের প্রিয় এলাকা ‘লিটল বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত এই অঞ্চলে রয়েছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন একাধিক প্রতিষ্ঠান।
ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউতে অবস্থিত লিটল বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট, পদ্মা রেস্টুরেন্ট, ঢাকা কাবাব, খাজানা কুইন এবং ঝলসহ আরও কিছু রেস্তোরাঁ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রবাসীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এদের মাধ্যমে স্থানীয়রা বাঙালি খাবার, সংস্কৃতি এবং গ্রোসারি পণ্যের স্বাদ নিতে পারছেন। এছাড়া সংবাদপত্র, কম্পিউটার ও প্রিন্টিংয়ের দোকান, বিভিন্ন ধরনের গ্রোসারি শপও রয়েছে এই এলাকায়। যার অধিকাংশের মালিক বাংলাদেশি। আবার যারা কাজ করেন তারাও বাংলাদেশি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এই এলাকাটি শুধু খাদ্য ও কেনাকাটার কেন্দ্র নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতিফলন। এখানে এসে আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষরা নিজের দেশের স্বাদ, রঙ ও ঐতিহ্য অনুভব করতে পারে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে টরন্টো সিটি কাউন্সিল এই এলাকার ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউয়ের ফার্মাসি অ্যাভিনিউ থেকে মেইন স্ট্রিট পর্যন্ত অংশকে ‘বংলা টাউন’ হিসেবে ঘোষণা করেন। এতে বাংলাদেশের প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি মিলেছে এবং ব্যবসায়িক সম্প্রসারণে নতুন উৎসাহ যোগ হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউ এখন কেবল পূর্ব টরন্টোর বাণিজ্যিক কেন্দ্র নয়, এটি বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত। এখানে এসে বাঙালি খাবারের স্বাদ, সঙ্গীত ও উৎসবের আনন্দ আমরা সবাই উপভোগ করি।
প্রবাসী সম্প্রদায়ের উদ্যোগে এই এলাকায় বাংলাদেশি খাবার উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হয়। ফলে ড্যানফোর্থ অ্যাভিনিউ কেবল অর্থনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে।