জাতিসংঘের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিশ্বব্যাপী নতুন করে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে আয়োজিত এক স্মরণানুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, বিভাজন ও সঙ্কটের মধ্যেই মানবজাতি ইতিহাস গড়ে তোলে।
গুতেরেস বলেন, অনেক সময় অন্ধকার সময়েই, যখন হতাশা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভাজন গভীর হয়, তখনই মানবজাতি একত্রিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বৈশ্বিক সমস্যার জন্য বৈশ্বিক সমাধান জরুরি। এ কারণেই জাতিসংঘ হলো মানব ইতিহাসের অন্যতম উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ, যেখানে পার্থক্য সত্ত্বেও সমস্যার সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গুতেরেস জাতিসংঘকে বর্ণনা করেন একটি ‘জীবন্ত উত্তরাধিকার’ হিসেবে, যা টিকে আছে সংস্থার পতাকার নিচে কাজ করা মানুষের মাধ্যমে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ কেবল ভবনের সমষ্টি নয়, কিংবা কাগজে লেখা কিছু শব্দও নয়—এটি জীবন্ত, কারণ এর ভেতরে মানুষ আছে।
শান্তিরক্ষী, মানবিক সহায়তাকর্মী, কূটনীতিক ও নাগরিক সমাজের অবদানকে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। গুতেরেসের ভাষায়, এরা ঘোষণার মাধ্যমে নয় বরং উৎসর্গ আর নিবেদনের মাধ্যমে বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন।
গত আট দশকে জাতিসংঘের অর্জনের মধ্যে তিনি উল্লেখ করেন যুদ্ধ প্রতিরোধ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি, মানবিক সহায়তার মাধ্যমে লাখো জীবন রক্ষা। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, জাতিসংঘের আসল মূল্য নিহিত রয়েছে শুধু অর্জনে নয়, বরং ভবিষ্যতের করণীয়তে।
তিনি সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান। পাশাপাশি বিশ্বনেতা ও সাধারণ নাগরিকদের জাতিসংঘের মিশন এগিয়ে নিতে নতুন করে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
গুতেরেস বলেন, আমরা যে উত্তরাধিকার পেয়েছি, তা যেন সম্মান করি এবং যে উত্তরাধিকার রেখে যাব, তার প্রতিও দায়বদ্ধ হই। আসুন, এই জীবন্ত উত্তরাধিকারকে সবার জন্য টিকিয়ে রাখি এবং এগিয়ে নিয়ে যাই।