লাদাখের অশান্তি নতুন মোড় নিল, শুক্রবার যখন প্রকৌশলী সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেফতার করল। পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে. জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু হয়েছে তার বিরুদ্ধে। কয়েকদিন আগেই লেহ শহরে হাজার হাজার তরুণ রাস্তায় নেমে দাবি তুলেছিল। সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল অন্তর্ভুক্তি এবং পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা বিক্ষোভ চলাকালে আগুন লেগেছিল বিজেপি দপ্তরে। পুলিশের গাড়ি পোড়ানো হয়েছিল প্রাণ হারিয়েছিলেন পাঁচজন। আহত হয়েছিলেন আরও অনেকে এরই প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ।
সরকারি সূত্র বলছে ওয়াংচুকের বক্তৃতা প্ররোচনামূলক ছিল। তার মন্তব্যে তরুণরা আরও ক্ষুব্ধ হয়েছিল। সরকারের দাবি এর ফলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এর আগে বিদেশি অনুদান সংক্রান্ত নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে তার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। সিবিআইও তদন্ত শুরু করে অভিযোগ ওঠে অবৈধভাবে অনুদান নেওয়া হয়েছে
বিজেপির দাবি, কংগ্রেস নেতারাও এই আন্দোলনে উসকানি দিয়েছেন। তাদের মতে বিরোধীরা সুযোগ নিয়েছে। স্থানীয় ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে আন্দোলনকে হিংসায় রূপ দিয়েছে। পাল্টা কংগ্রেস বলছে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি। রাজ্যত্ব ও সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি কেবল কাগজেই রয়ে গেছে বাস্তবে হয়নি। কংগ্রেসের ভাষায় এ কারণে হতাশ তরুণ প্রজন্ম ক্ষোভ প্রকাশে রাস্তায় নেমেছে। বিরোধীরা স্পষ্ট বলেছে সরকারের দমননীতি সমস্যার সমাধান করবে না
অন্যদিকে ওয়াংচুক বলেছেন, তিনি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে। তার গ্রেফতার মানুষকে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা। লাদাখের মানুষকে চুপ করিয়ে রাখা যাবে না বরং এর ফলে ক্ষোভ বাড়বে। তিনি দাবি করেছেন আন্দোলনে কংগ্রেসের বড় কোনো ভূমিকা নেই এটি স্থানীয় মানুষের প্রকৃত দাবি
গ্রেফতারের পর লেহ শহরে জারি হয়েছে কারফিউ টহল দিচ্ছে সেনা ও পুলিশ। প্রশাসন জানিয়েছে, শিগগিরই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে যেখানে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। তবে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার আলোচনায় গড়িমসি করছে সময় নষ্ট করছে ফলে মানুষ হতাশ হচ্ছে
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারি গুরুতর বিষয় শান্তিপূর্ণ মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে ইতোমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। ওয়াইসিও মন্তব্য করেছেন সরকারের উচিত ছিল সংলাপ কররা। দমননীতি কোনো সমাধান নয় কংগ্রেসও বলছে ওয়াংচুকের গ্রেফতার সরকারের অক্ষমতা ঢাকার চেষ্টা।
পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে এখন সেটাই বড় প্রশ্ন। বিশ্লেষকদের মতে, গ্রেফতার সাময়িকভাবে উত্তেজনা কমালেও সমস্যা সমাধান হবে না। লাদাখবাসীর দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনায় না বসলে পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে। এখন লাদাখের মানুষ অপেক্ষা করছে সরকার সত্যিই আলোচনার পথে হাঁটবে নাকি কঠোর নীতি নিয়েই এগোবে।