বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

শিরোনাম

ভিসা ফি বাড়ায় ভেস্তে যাচ্ছে ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এইচ-১বি ভিসার ফি হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোয় হাজারো ভারতীয় তরুণ-তরুণীর আমেরিকার স্বপ্ন ভেস্তে যাচ্ছে।

আগে যেখানে একটি ভিসার খরচ ছিল প্রায় ২ হাজার ডলার, সেখানে এখন তা বেড়ে সর্বোচ্চ ১ লাখ ডলার পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। ফলে একজন এইচ-১বি কর্মী নিয়োগ দিতে নিয়োগদাতাদের ন্যূনতম ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। এই বাড়তি খরচের কারণে অনেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কর্মী নিয়োগের দিকে ঝুঁকছে।

মেঘনা গুপ্তা নামের এক তরুণী জানান, শৈশব থেকেই তিনি আমেরিকায় ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেসে (টিসিএস) দীর্ঘ পরিশ্রমের পর যখন সেই সুযোগ হাতের নাগালে এসেছিল, তখন ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত তার সব পরিকল্পনা ধূলিসাৎ করেছে। তার ভাষায়, আমেরিকান ড্রিম এখন এক নির্মম রসিকতায় পরিণত হয়েছে।

বিগত কয়েক দশক ধরে ভারতীয়রাই সবচেয়ে বেশি এইচ-১বি ভিসা পেয়ে আসছেন। ২০২৪ সালে মোট ভিসার মধ্যে ৭০ শতাংশই ভারতীয় নাগরিকদের হাতে গিয়েছিল। তবে নতুন নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সেই দরজা কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ভারতের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ অজয় শ্রীবাস্তবের মতে, আইটি, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যখাতের ব্যাক-এন্ড সাপোর্ট—যেসব ক্ষেত্রে ভারতীয়রা প্রধান ভূমিকা পালন করছিলেন—সেসব খাতেই বড় ধরনের ধাক্কা আসবে।

উত্তর আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান স্টুডেন্টসের প্রতিষ্ঠাতা সুধাংশু কৌশিক বলেন, এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য হলো ভিসাধারীদের আতঙ্কে রাখা এবং মনে করিয়ে দেওয়া যে তারা এখানে স্বাগত নন।

এমনকি মার্কিন বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও বলছে, এই নীতি শুধু ভারতীয় পেশাজীবীদের নয়, বরং আমেরিকার নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রধান সচিব পি কে মিশ্র জানিয়েছেন, সরকার ভারতীয় দক্ষ কর্মীদের দেশে ফিরতে উৎসাহিত করছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিবাসন নীতি অনেককেই বিকল্প হিসেবে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপের দেশগুলোর দিকে ঠেলে দেবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন ভিসা নীতি শুধু ভারতীয় আইটি খাতের ওপর নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপরও গভীর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।