রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিরোনাম

অতীত ভুলে সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক চায় হিজবুল্লাহ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

অতীতের বিরোধ ভুলে সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চায় লেবাননের ইরানসমর্থিত শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। শুক্রবার এক টেলিভিশন ভাষণে সংগঠনের প্রধান নাঈম কাসেম ইসরাইলের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। লেবানন–সৌদি সম্পর্কের দীর্ঘদিনের বৈরিতার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

২০১৬ সালে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়াদ, ওয়াশিংটন এবং লেবাননের প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলো দেশটির সরকারকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। গত বছর ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে হিজবুল্লাহ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে এবং সংগঠনের শীর্ষ নেতা নিহত হন।

রয়টার্স জানায়, ভাষণে কাসেম বলেন—মধ্যপ্রাচ্যের আসল হুমকি হিজবুল্লাহ নয়, ইসরাইল।

তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, প্রতিরোধের অস্ত্র কেবল ইসরাইলি শত্রুর দিকেই তাক করা আছে, লেবানন, সৌদি আরব বা অন্য কোনো রাষ্ট্র বা সত্তার দিকে নয়।’

কাসেমের মতে, সংলাপের মাধ্যমে অন্তত এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে একসঙ্গে ইসরাইলকে মোকাবিলা করা দরকার। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে দেন, হিজবুল্লাহর ওপর চাপ সৃষ্টি করা মানে কেবল ইসরাইলকেই সুবিধা দেওয়া।

একসময় সৌদি আরব লেবাননে বিপুল বিনিয়োগ করে এবং ২০০৬ সালের হিজবুল্লাহ–ইসরাইল যুদ্ধের পর দক্ষিণ লেবানন পুনর্গঠনে সহায়তা দিয়েছিল। কিন্তু ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।

২০২১ সালে সৌদি আরব লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে এবং নিজেদের দূত ফিরিয়ে নেয়। তখন রিয়াদের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, হিজবুল্লাহ লেবাননের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। পাল্টা বক্তব্যে হিজবুল্লাহর মহাসচিব হাসান নাসরুল্লাহ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দেন এবং ইয়েমেনে সৌদি ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে আঞ্চলিক রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন ঘটেছে। গত বছর ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহ বড় আঘাতের শিকার হয় এবং নাসরুল্লাহ নিহত হন। একইসঙ্গে গত ডিসেম্বরে তাদের সিরীয় মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদও ক্ষমতাচ্যুত হন।